তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
পাঠক বৃন্দ আপনাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম রাহমাতুল্লাহে বারাকাতুহু । কেমন আছেন আপনারা সবাই ? আশা করি অনেক ভাল আছেন । আলহামদুলিল্লাহ আমরা অনেক ভালো আছি । আজকে আমরা আপনাদের মাঝে তারাবির নামাজ সুন্নত না নফল |
তারাবির নামাজ কিভাবে পড়তে হয় প্রাণ। ইসলাম প্রিয় ভাই ও বোনেরা তারাবির নামাজ সুন্নত না নফল বিষয়টি আমরা খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের সাইটে প্রকাশ করছি। আপনারা অবশ্যই ধৈর্য সহকারে আমাদের পুরো পোস্টটিি পড়বেন।
তারাবীহের নামাজ এবং তার হুকুম এই পবিত্র মাসে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য শরীয়ত হিসেবে যা পেশ করেছেন তম্মধ্যে তারাবীর নামাজ একটি। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। মানুষ প্রতি চার রাকাত পর আরাম করে তাই এ নামাজকে তারাবীহ বলা হয়।
তারাবীহ দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। তাহাজ্জুদও অনুরূপ। কোন কোন মসজিদের ইমাম না বুঝে ভুল করেন। তারা দুই রাকাতের পর তারাবীহ অথবা তাহাজ্জুদ কোনটিতেই সালাম ফিরান না। এটা সুন্নাতের খেলাফ। ওলামাগণ বলেছেন যে, যে ব্যক্তি তারাবীহ অথবা তাহাজ্জুদের তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যায় সে যেন ফজর নামাজের তৃতীয় রাকাতে দাড়ালো। অর্থাৎ তার নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে। তারাবীহ জামাআতে মসজিদে আদায় করা উত্তম। ন
বী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ নামাজ মসজিদে পড়েছেন। তার সাথে লোকজনও নামাজ আদায় করেছে। আগমনকারী পরবর্তী রাতেও তিনি নামাজ পড়লেন। লোকজনও হয়েছিল বেশি। তার পর লোকজন তৃতীয় কিংবা চুতুর্থ রাত্রিতে একত্রিত হলো অথচ আল্লাহর রাসূল তাদের নিকট আসেননি।সকাল বেলা তিনি লোকদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা যা করেছ আমি তা দেখেছি, আমার বের না হওয়ার কারণ হলো, আমার ভয় হচ্ছিল যে, এ নামাজ তথা তারাবীহ তোমাদের জন্য ফরয হয়ে যাবে। (বুখারী: ১১২৯ মুসলিম : ৭৬১) বর্ণনাকারী বলেন, এ ঘটনা রমজান মাসে হয়েছিল। তার পর সাহাবা আজমাঈন তারাবীহ আদায় করেছেন। এবং সমস্ত উম্মত তা গ্রহণ করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু
তারাবির নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
তারাবীর রাকাত সংখ্যা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা পাওয়া যায় না। বরং এতে স্বাধীন সুযোগ রয়েছে। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন : নামাজী ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী ২০ রাকাত পড়বে। এটি শাফী রহ. এবং আহমদ রহ এর প্রসিদ্ধ মত। ইচ্ছে হয় ৩৬ রাকাত পড়বে। এটা ইমাম মালেকের মত। ইচ্ছে হয় ১১,১৩ পড়বে, সব ক’টিই সঠিক আছে। রাকাত কম হলে কিয়াম লম্বা হবে আর কিয়াম স্বল্প হলে রাকাত বেশি হবে।
তারাবী নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (তবে পুরুষ মসজিদে জামাতের সাথে আর মহিলাগণ ঘরে পড়বে।) কেননা খোলাফায়ে রাশেদীন (বিশেষ করে উমর রাযি.-এর খেলাফতের শেষ জামানা থেকে) মুয়াযাবাত তথা নিয়মিত তারাবী নামায পড়তেন। আর রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন যে, عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدي عضوا عليها بالنواجذ “তোমরা আমার সূন্নাতকে আঁকড়ে ধর এবং
খোলাফায়ে রাশেদীনের সূন্নাতকে আঁকড়ে ধর। তার উপর তোমরা অটুট থাক।” (আবু দাউদ ৪৬০৭, তিরমিজী ২৬৭৬)
তারাবী নামায সুন্নত হওয়াকে যে অস্বীকার করবে অথবা অবৈধ মনে করবে সে বিদআতের আবিস্কারক, পথভ্রষ্ট। আর তাহতাবী কিতাবে রয়েছে যে তারাবী নামায সুন্নত, এই নামায বর্জন ও ছেড়ে দেওয়া জায়েয নাই। (কামুসুল ফিকহ ২/৪৪৮)
মাহে রমজানে রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, একে ‘তারাবি নামাজ’ বলা হয়। আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। তারাবি নামাজ পড়াকালে প্রতি দুই রাকাত বা চার রাকাত পরপর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই ‘তারাবি’। দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘবের জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয় বলে এ নামাজকে ‘সালাতুত তারাবিহ’ বা তারাবি নামাজ বলা হয়।
রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবি নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে তারাবি নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা ও কোরআন শরিফ খতম করা অধিক সওয়াবের কাজ। তবে ঘরে সূরা-কিরাআতের মাধ্যমে আদায় করলেও সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) তারাবি নামাজের জন্য রাতের কোনো বিশেষ সময়কে নির্দিষ্ট করে দেননি। তবে তারাবি নামাজ অবশ্যই এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে।
নবী করিম (সা.) বেশির ভাগ সময় রাতের শেষাংশে তারাবি আদায় করতেন এবং প্রথমাংশে বিশ্রাম নিতেন। তিনি কখনো আট রাকাত, কখনো ১৬ রাকাত, আবার কখনো ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু বিশেষ কারণবশত নিয়মিত ২০ রাকাত পড়তেন না। কেননা, তিনি কোনো কাজ নিয়মিত করলে তা উম্মতের জন্য ওয়াজিব তথা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে যায়। এ করুণা দৃষ্টির কারণে তিনি তাঁর আমলে প্রতিনিয়ত ২০ রাকাত পূর্ণ তারাবি জামাত হতে দেননি। যার দরুন সালাতুত তারাবিহ সুন্নত, ওয়াজিব নয়; তবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা জরুরি সুন্নত। ২০ রাকাত তারাবি নামাজ হওয়ার সপক্ষে দলিল সহিহ হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘নবী করিম (সা.) রমজান মাসে বিনা জামাতে (একাকী) ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করতেন, অতঃপর বিতর নামাজ পড়তেন।’ (বায়হাকি)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর তারাবি নামাজ ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আর থাকেনি। তাই তারাবির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব হজরত ওমর (রা.)-এর আমলে কার্যকর হয়। ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর (রা.) ও দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতকালেও তারাবি নামাজ ২০ রাকাত পড়া হতো। হজরত ওমর (রা.) মসজিদে নববিতে সাহাবিদের খণ্ড খণ্ড জামাতে ও একাকী তারাবির নামাজ পড়তে দেখে সবাই মিলে এক জামাতে তারাবি পড়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতকালে সাহাবিদের ইজমা দ্বারা মূলত রমজান মাসের মধ্যে ২০ রাকাত তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার রীতির প্রচলন হয়।
মহানবী (সা.) রমজান মাসে তারাবি নামাজ আদায় করার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান করতেন। তারাবি নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব প্রাপ্তির আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে, তার অতীতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম) মাহে রমজানে রোজা, তারাবি নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদতের দরুন আল্লাহ তাআলা রোজাদার ব্যক্তির আগের সব গুনাহ মাফ করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রোজা রাখেন, তারাবি নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেন, তাঁর জীবনের পূর্বের সব গুনাহ মাফ করা হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বদা তারাবি নামাজ আদায় করতেন। তবে তিনি মাত্র চার রাত তারাবি নামাজ জামাতে পড়েছিলেন; কারণ যদি তিনি সর্বদা জামাতে তারাবি নামাজ আদায় করেন, তাহলে তাঁর উম্মতেরা ভাববেন যে হয়তো এ তারাবি নামাজ ফরজ। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই রাতে ২০ রাকাত করে তারাবি নামাজ পড়িয়েছেন। তৃতীয় রাতে লোকজন জমা হলেও রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত হননি। পরদিন সকালে তিনি ইরশাদ করলেন, ‘আমি তোমাদের ওপর তারাবি নামাজ ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছি। তখন তো তা তোমাদের জন্য কষ্টকর হবে।’ তাই দৈহিক বা মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ২০ রাকাত অথবা কমপক্ষে আট রাকাত তারাবির সুন্নত নামাজ পড়ার সুযোগ আছে।
তারাবি নামাজের জামাতে পবিত্র কোরআন খতম করা হয়, তাই জামাতে তারাবি নামাজ পড়লে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়। রমজান মাসে তারাবি নামাজের কিয়াম হলো আল্লাহর রাস্তায় আরামকে হারাম করে কঠোর পরিশ্রম করার শপথ অনুষ্ঠান। তারাবি নামাজের প্রতিটি মুহূর্ত পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শ্রবণ ও আল্লাহকে স্মরণ ও জীবনে সফলকাম হওয়ার জন্য স্রষ্টার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজাগুলো ফরজ করেছেন এবং এর রাতে তারাবি নামাজের জন্য দণ্ডায়মান হওয়াকে অশেষ পুণ্যের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।’
মাহে রমজানের রাতে তারাবি নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রতিদিন মসজিদে সমবেত হন। দেশের প্রতিটি মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতমে তারাবি পড়ার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ রোজার প্রথম ছয় দিন দেড় পারা করে ও পরে লাইলাতুল কদর পর্যন্ত বাকি ২১ দিন এক পারা করে তিলাওয়াত করার পরামর্শ দিয়েছে। যেন স্থ্থান পরিবর্তন করলেও কোনো মুসল্লি খতমে তারাবিতে কোরআন তিলাওয়াতে শরিক হওয়ার ধারাবাহিকতা থেকে বঞ্চিত না হন।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ ও দাওয়াহ বিভাগ, ধর্মবিজ্ঞান অনুষদ, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ আলোচনা করব তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল। এবং তারাবির নামাজ কত রাকাত এবং কীভাবে পড়বেন তাও আলোচনা করব। আমরা অনেকেই এই নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছি। আজ আমি আপনাদের সন্দেহ দূর করবো ইনশাআল্লাহ। রমজান মাস হচ্ছে আমাদের পবিত্র মাস। কোরআনে এ মাসকে আল্লাহতালা শ্রেষ্ঠ মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
এই রমজান মাসে ইবাদত-বন্দেগির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এই মাসকে ফজিলতের দিক থেকে অন্যান্য মাস থেকে উত্তম। রোজাকে এই মাসে ফরজ করা হয়েছে। তাই আমরা সবাই এিশ দিন রোজা রাখি।
সালাতুত তারাবিহ রমজান মাসের একটি নামাজ।রোজার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান হলো তারাবির নামাজ। তারাবির নামাজ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম পড়েছেন।এবং সাহাবাদের ও নির্দেশ দিয়েছেন পড়ার জন্য।
আমরা অনেকেই জানি না তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল। এই নামাজ নারী-পুরুষ সবার জন্যই সুন্নতে মুয়াক্কাদা। জামাতের সাথে আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
এই নামাজে কোরআন শরীফ খতম করার সওয়াব পাওয়া যায়। সূরা কেরাতের মাধ্যমে আপনি আদায় করতে পারবেন। তাতেও অধিক সওয়াব পাওয়া যায়।কোরআন মাজিদের পাঁচশত চল্লিশ রুকুতে বলা হয়েছে।
তারাবির নামাজে কুরআন খতম লাইলাতুল কদর রাতের পূর্বে যাতে সমাপ্ত করা হয়।এ ব্যাপারে ইমামদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখার তাগিদ দিয়েছেন।
হাদিসের আলোকে তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
রমজান মাসের রাতে এশার নামাজের পর। এবং দুই রাকাত সুন্নতের পর। এবং বিতর নামাজের আগে। আমরা দুই রাকাত করে বিশ রাকাত নামাজ পড়ে থাকি। এই নামাজকে তারাবির নামাজ বলা হয়। তারাবীহ শব্দটি রাহাতুন থেকে আগত।
এর শাব্দিক অর্থ হলো আরাম করা।আমরা তারাবির নামাজ পড়ার সময় দুই রাকাত পর। অথবা চার রাকাত পর আমরা আরাম করি। অর্থাৎ দোয়া- দুরুদ পড়ি। তাই এর নাম তারাবি। আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করবে, সে পথভ্রষ্ট। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আমার সুন্নতকে আঁকড়ে ধর এবং খোলাফায়ে রাশেদীন এর সুন্নতকে আঁকড়ে ধর। তারাবির নামাজ কোন সময় পড়তে হবে।
তারাবির নামাজের সময় জানুন এবং পড়ুন
সময় নিয়ে রাসুল সাঃ নির্দিষ্ট করেননি।তবে তারাবির নামাজ এশার নামাজের পরে এবং ফজরের আগে যে কোন সময় পড়তে হবে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ রাতের শেষভাগে আদায় করতেন। কারণ রাতের প্রথম দিকে তিনি আরাম করতেন।
তারাবির নামাজ বিশ রাকাত না ষোল রাকাত জেনে নিন
তারাবির নামাজ বিশ রাকাত না চার রাকাত এই ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট হাদিস নেই। কেননা রাসুল সাঃ মাঝে মাঝে আট রাকাত অথবা ষোল অথবা বিশ রাকাত তারাবি আদায় করতেন। কিন্তু নিয়মিত বিশ রাকাত আদায় করতেন না।
কারণ তিনি যদি নিয়মিত করতেন, তা মানবজাতির জন্য অত্যাবশ্যকীয় হত। তাই রাসুল সাঃ এর আমলে বিশ রাকাত জামাত হয়নি।তাই এই নামায ওয়াজিব নয়। তবে তা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে।রাসুল সাঃ বিশ রাকাত তারাবি জামাত বিহীন আদায় করতেন। তারপর বিতর নামায আদায় করতেন। এই হাদিসটি বায়হাকী গ্রন্থের হাদিস।
তারাবির নামাজ নিয়মিত বিশ রাকাত পড়ার সময়কাল
রাসুল সাঃ এর ইন্তেকালের পর এই নামাজ ওয়াজিব হওয়ার আশঙ্কা নেই। তাই হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা এর আমলে এই নামাজের প্রতি জোর দেওয়া হয়।হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা এবং হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা এর সময়ে তারাবি বিশ রাকাত পড়া হতো।
তার আমল থেকেই এই রীতি শুরু হয়। একদা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু সাহাবীদের একা একা নামাজ পড়তে দেখলেন।তারপর জামাতে আদায় করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন।তার আমলে বিশ রাকাত পড়ার নিয়ম প্রচলন হয় ইজমা দ্বারা।
তারাবির সুন্নত নামাজের ফযিলত অনেক
রাসুল সাঃ রমজান মাসে তারাবি নামাজ আদায় করার অনুপ্রেরণা দিতেন। এর ফজিলত সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় রমজানের রজনীতে তারাবি নামাজ পড়ে,তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়”।
এই হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম গ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে। যদি কোন ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখে। তারাবির নামাজ আদায় করে।এবং কোরআন তেলাওয়াত করে। আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেন।
হযরত মুহাম্মদ সাঃ ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও আত্মান্বেষণের সঙ্গে নেক পাওয়ার আশায় রোজা রেখে, তারাবির নামাজ আদায় করে এবং কদর রাতে সারারাত ইবাদত করে,আল্লাহ তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেন”। এই হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আছে।হযরত মুহাম্মদ সাঃ সব সময় তারাবির নামাজ পড়তেন।
রাসূল সাঃ কত রাত জামাতে আদায় করেছিলেন
তিনি চার রাত জামাতে আদায় করেছিলেন। কেননা সর্বদা পড়লে, উম্মতেরা ভাবতো ফরজ। হাদিসে আছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টানা দুই দিন বিশ রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন।
কিন্তু তৃতীয় রাতে সবাই আসলেও তিনি সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন।পরদিন সকালে তিনি সবাইকে বললেন, “আমি তোমাদের উপর তারাবির নামাজ ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনুভব করেছিলাম।
পরে তোমাদের জন্য তা কঠিন হতো। আমরা এই হাদিস থেকে অনুধাবন করতে পারি তারাবির নামাজ নফল নয়। এই নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আপনি সর্বনিম্ন ৮ রাকাত থেকে শুরু করে ২০ রাকাত পর্যন্ত আদায় করতে পারেন।
আমরা জানি বড় বড় মসজিদ গুলোতে তারাবির নামাজে জামায়াতে কুরআন খতম দেওয়া হয়।তাই আপনি যদি জামাতের সাথে আদায় করেন। তাহলে আপনি বেশি সওয়াবের অধিকারী হবেন।
তারাবি নামাজের ফজিলত অনেক বেশি। এই আমাদের প্রত্যেকটা মুহূর্ত কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে অতিবাহিত হয়। এই নামাজে আল্লাহর প্রিয় হওয়া যায়।
হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন ,আল্লাহ তা’আলা রোজা বাধ্যতামূলক করেছেন এবং তারাবির নামাজে দাঁড়ানো তা ভাল কাজ হিসেবে ঘোষনা করেছেন। রমজান মাসের তারাবির নামাজ আমাদের জন্য একটি নেয়ামত।
প্রকৃতপক্ষে রমজান মাস আমাদের জন্য এক বিশেষ নেয়ামত। তাই আমরা ত্রিশটি রোজা রাখব। কোরআন তেলাওয়াত করব। কমপক্ষে আট রাকাত হলেও জামাতের সাথে তারাবির নামাজ আদায় করব। আশা করি, আপনারা তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল জানতে পেরেছেন।