বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা || দৈনিক শেয়ার বাজার

 

বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা ||  ব্যাংকের নতুন অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে বিএসইসির চিঠি

বাংলাদেশের স্টক মার্কেট দিন দিন বড় হচ্ছে, আগামীদিনে সঠিক স্টকে টাকা রাখলে ১০ বছরে ১০ গুন্ টাকা বেড়ে যেতে পারে।
২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করে শেয়ারবাজারে ফ্রেশ ফান্ড (নতুন অর্থ) বিনিয়োগের জন্য দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সই করা এ সংক্রান্ত চিঠি বুধবার (২৩ মার্চ) সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে দেশের শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন উল্লেখ করে বলা হয়েছে। দেশের শেয়ারবাজারে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়া উচিত।
এতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি ব্যাংকে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। যা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকের এক্সপোজারের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
আইনানুযায়ী ব্যাংক মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। অনেক ব্যাংকের বিনিয়োগ এ সীমার নিচে রয়েছে। এসব তথ্য তুলে ধরে চিঠিতে, ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন এবং পুঁজিবাজারে নতুন অর্থ বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তারল্য সংকট ও আস্থাহীনতার কারণে শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক দরপতন দেখা দিলে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল চায়।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামত জানতে চাইলে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়। অর্থ মন্ত্রণালয় শেয়ারবাজারে তারল্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। এরপর ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালা বিষয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত যেকোনো তফসিলি ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে এ সুবিধা নিতে পারবে।
তহবিল গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, আর্থিকখাতের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকগুলোর নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগের আইন রয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার ও মুদ্রা বাজারের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী হিসেবে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্রমাগত তারল্য প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউজ) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজকে শুধু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় এ তহবিল সরবরাহ করা হবে।
তফসিলি ব্যাংকগুলো চাইলে নিজস্ব উৎস থেকে তহবিল যোগান দিতে পারে। এছাড়া ধারণকৃত ট্রেজারি বিল বা বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে।
এছাড়া প্রথমে নিজ উৎস থেকে তহবিল গঠন করে পরে ট্রেজারি বিল বা বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ অর্থ নেওয়া যাবে। এ তহবিল থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ২৬ ক ধারায় বর্ণিত বিনিয়োগসীমা অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য থেকে ট্রেজারি বন্ড বা বিলের মাধ্যমে এ সুবিধা নিতে হবে। ট্রেজারি বন্ড বা বিলের রেপো মূল্যের ৫ শতাংশ মার্জিন হিসেবে রেখে তারল্য সুবিধা দেওয়া হবে। নগদ রেপোর অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণের দিনে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজের বাজার মূল্য আদায়যোগ্য অর্থ অপেক্ষা কম হলে তা আগে গৃহীত মার্জিন থেকে সমন্বয় করা হবে। সমন্বয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হলে ব্যাংক তা দিতে বাধ্য থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৯০ দিন মেয়াদি রেপো দেওয়া হবে। রেপোতে বর্ণিত সময়সীমা ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পুনর্নবায়নের সুবিধা থাকবে। তবে, এক্ষেত্রে তহবিল ব্যবহারের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচ্য হবে।
তারল্য সুবিধা পেতে ব্যাংকগুলোকে যেসব শর্ত পরিপালন করতে হবে, সেগুলো হলো:
এ তারল্য সুবিধা পেতে অর্থের কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের মহাব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করতে হবে।
মেয়াদোত্তীর্ণ রেপো নবায়নের প্রয়োজন হলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের একই বিভাগে আবেদন করতে হবে।
আবেদনের সময় সম্পাদিত বিনিয়োগের প্রমাণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাবের বিবরণ দাখিল করতে হবে।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইন এবং সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারি করা অন্যান্য নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা || মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার পারপেচুয়াল বন্ড অনুমোদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। কমিশন সভা শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার পারপেচুয়াল বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। বন্ডটির ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে ৪৫০ কোটি টাকা প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা হবে। বাকি ৫০ কোটি টাকা পাবলিক অফারের মাধ্যমে ইস্যু করা হবে। বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য পাঁচ হাজার টাকা। বন্ডটির কুপন হার ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচুয়াল ফান্ড, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, তালিকাভুক্ত ব্যাংক, আঞ্চলিক রুরাল ব্যাংক, ট্রাস্ট, সংগঠন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বন্ডটি ইস্যু করা হবে। এই বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে উত্তোলন করা অর্থ মার্কেন্টাইল ব্যাংক অতিরিক্ত টায়ার-১ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করবে।
এই বন্ডের ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও লিড অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমেটিড কাজ করছে।

বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা || শেয়ারবাজারে বড় উত্থান

টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর মঙ্গলবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন লেনদেন শুরু হতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। এতে লেনদেনের প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়তে থাকে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৭১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিকিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৩টির দাম বেড়েছে তিন শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে দুটির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চসীমা স্পর্শ করে।
সূচকের বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৫৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৩৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩২২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমরা টেকনোলজির ৩৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৯৮ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিএফএস থ্রেড ডাইং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, ওরিয়ন ফার্মা, বিডিকম অনলাইন, ড্রাগন সোয়েটার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও আমরা নেটওয়ার্ক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৭টির এবং ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

Leave a Comment